সন্ধিপ্রকরণম্

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - সংস্কৃত - দ্বিতীয় অধ্যায় | | NCTB BOOK
1

সন্ধি: অত্যন্ত কাছাকাছি অবস্থিত দুটি বর্ণের পরস্পর মিলনকে সন্ধি বলা হয়। যেমন- মহা+ঈশঃ =
মহশেঃ। এখানে 'মহা' পদের অন্তস্থিত 'আ' এবং 'ঈশঃ' পদের পূর্বস্থিত 'ই' মিলিত হয়ে 'এ' হয়েছে।

সন্ধির অপর নাম সংহিতা।

সন্ধির শ্রেণীবিভাগ : সন্ধি দুই প্রকার- স্বরসন্ধি বা অসন্ধি এবং ব্যঞ্জনসন্ধি বা হসন্ধি। বিসর্গসন্ধি
ব্যঞ্জনসন্ধিরই অন্তর্গত।

ময়সন্ধি বা অসন্ধি: ফরবর্ণের সঙ্গে সরবর্ণের মিলনকে স্বরসন্ধি বা অসন্ধি বলা হয়। যেমন- দেব +
আলয় = দেবালয়ঃ। এখানে 'দেব' পদের অন্তস্থিত অ এং 'আলয়ঃ' পদের প্রথমে অবস্থিত আ মিলিত হয়ে
আ হয়েছে।

ব্যঞ্জনসন্ধি বা হসন্ধি: ব্যঞ্জনবর্ণের সঙ্গে ব্যঞ্জনবর্ণের অথবা সরবর্ণের মিলনকে ব্যঞ্জনসন্ধি বা হসি
বলে। যেমন- চলৎ + চিত্র = চলচ্চিত্র। এখানে চলৎ পদের অন্তস্থিত ব্যঞ্জনবর্ণ (ত্)-এর পর
ব্যঞ্জনবর্ণ চ থাকায় ও স্থানে চূ হয়েছে এবং উভয়ের মিলনে হয়েছে চ্চ। বাক্ + ঈশঃ বাগীশঃ। এখানে
=
'বাক্' শব্দের অন্তস্থিত ব্যঞ্জনবর্ণ 'ক্'-এর পর স্বরবর্ণ 'ঈ' থাকায় ক্ স্থানে গু হয়েছে।

বিসর্গসন্ধি: বিসর্গের সঙ্গে জ্বর অথবা ব্যঞ্জনবর্ণের মিলনকে বিসর্গসন্ধি বলে। যেমন- পুনঃ + আপতঃ =
পুনরাগতঃ। এখানে 'পুনঃ পদের অন্তস্থিত (বিসর্গ)-এর পরে স্বরবর্ণ 'অ' থাকায় বিসর্গস্থানে র হয়েছে।
কঃ + চিৎ = কশ্চিৎ। এখানে 'কঃ' পদের অন্তস্থিত বিসর্গের পরে 'চ'- এই ব্যঞ্জনবর্ণ থাকায় বিসর্গস্থানে
"শ" হয়েছে।

সন্ধির প্রয়োজনীয়তা : সন্ধির দ্বারা শব্দগঠন, বাক্যসংক্ষেপণ ও শ্রুতিমধুরতা সম্পাদিত হয়।
সন্ধির অপরিহার্যতা একপদে ধাতু বা ধাতুঘটিত শব্দের পূর্বে উপসর্গের যোগে, সমাসে এবং সূত্রে সি
অবশ্যকরণীয়।

স্বরসন্ধির নিয়ম

অ-কার কিংবা আ-কারের পর অ-আর কিংবা আ-কার থাকলে উভয়ে মিলিত হয়ে আ-কার হয়,

আ-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয় :

অ+অ= আ

নীল + অশ্বরম্ =
নীলাম্বরম্

হিম + আলয়ঃ = হিমালয়ঃ

অ + আ = আ

মহা + অ = মহ

আ + অ = আ

আ + আ = আ

মহা + আশয়ঃ + মহাশয়ঃ

২। হ্রম ই-কার কিংবা দীর্ঘ ই-কারের পর হ্রম ই-কার কিংবা দীর্ঘ ই-কার থাকলে উভয়ে মিলিত হয়ে দীর্ঘ
ঈ-কার হয়, দীর্ঘ ঈ-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন-

ই + ই =

কবি + ইন্দ্ৰঃ = কবীন্দ্রঃ

এই + ঈ = ঈ

গিরি + ঈশঃ = গিরীশঃ

ঈ + ই = ঈ

মহী + ইন্দ্ৰঃ = মহীন্দ্ৰঃ

ঈ + ঈ = ঈ

লক্ষ্মী = ঈশঃ = লক্ষ্মীশঃ

01
জয় উ-কার কিংবা দীর্ঘ উ-কারের পর হ্রয় উ-কার কিংবা দীর্ঘ ঊ-কার থাকলে উভয়ে মিলে দীর্ঘ
উ-কার হয়, ঊ-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন-

বিধু + উদয়ঃ বিধৄদয়ঃ

লঘু + ঊর্মি = = লঘূর্মিঃ

উ+ উ = উ

বধূ + উৎসবঃ = বধূৎসবঃ

উ+ উ =উ

ভূ + ঊর্ধ্ব =

উ + উ =উ

81
অ-কার কিংবা আ-কারের পর তুষ ই-কার কিংবা দীর্ঘ ঈ-কার থাকলে উভয়ের মিলনে এ-কার হয়।
এ-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন-

অ + ই = এ

আ + ই = এ

অ + ঈ = এ

আ + ঈ = এ

অ + উ = ও

দেব ইন্দ্ৰঃ দেবেন্দ্রঃ

মহা = ইন্দ্ৰঃ = মহেন্দ্ৰ

গণ ঈশঃ গণেশঃ

মহা + ঈশ্বরঃ= মহেশ্বরঃ

অ-কার কিংবা আ-কারের পর হ্রয় উ-কার কিংবা দীর্ঘ ঊ-কার থাকলে উভয়ে মিলিত হয়ে ও-কার হয়,

ও-কার পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন-

চন্দ্র + উদয়ঃ = চন্দ্রোদয়ঃ

আ + উ = ও

গঙ্গা + উদকম্ = গঙ্গোদকম্

অ + উ = ও

গৃহ + ঊর্ধ্বম্ = গৃহোধধম্

আ + উ = ও

গঙ্গা + ঊর্মিঃ = গঙ্গোর্মিঃ।

অ-কার কিংবা আ-কারের পর ঋ-কার থাকলে উভয়ে মিলিত হয়ে অর্থ হয়। অর্-এর 'অ' পূর্ববর্ণে যুক্ত

হয় এবং বৃ রেফ (') রূপে পরবর্ণের মস্তকে যায়। যেমন-

অ + খ = অব্

সপ্ত + ঋষিঃ = সপ্তর্ষিঃ

অ + ঋ = অর্

আ + = অ

দেব + ঋষিঃ = দেবর্ষিঃ

মহা + ঋষিঃ মহর্ষিঃ

=

আ + ব = অর্

রাজা + ঋষিঃ = রাজর্ষিঃ

91
অ-কার কিংবা আ-কারের পর এ-কার কিংবা ঐ-কার থাকলে উভয়ের মিলনে ঐ-কার হয়, ঐ কার

পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন—

অ + এ = ঐ

+4=2

এক + এক = একৈকম

সদা + এর = সদৈব

অ + ঐ= ঐ

মত + ঐক্যম্ = মতৈকা

আ + =

মহা + ঐশ্বৰ্যম্ = মহৈশ্বৰ্যম

অ-কার কিংবা আ-কারের পর ও-কার কিংবা ঔ-কার থাকলে উভয়ে মিলিত হয়ে ঔ-কার হয়,
-কার

পূর্ববর্ণে যুক্ত হয়। যেমন-

জল + ত =

আ + ও = ঔ

মহা ঔষধিঃ = মহৌষধিঃ

2=2+2

গত + ঔৎসুক্যম্ = গভৌৎসুক্যম্

আ = ঔ = ঔ

মহা + ঔদার্যম্ = মহৌদার্থ

৯। হ্রষ ই-কার কিংবা দীর্ঘ ঈ-কারের পর যদি হ্রম-ইকার কিংবা দীর্ঘ ঈ-কার ভিন্ন অন্য স্বরবর্ণ থাকে, তবে
হ্রয় ই-কার বা দীর্ঘ ঈ-কার স্থানে 'যূ' হয়। উক্ত য্ য-ফলা (1)-রূপে পূর্ববর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং
পরবর্তী স্বরবর্ণ খৃ-কারে যুক্ত হয়। যেমন-

ই+অ= ই-স্থানে হ্

ই+উ = ই-স্থানে

যদি + অপি = যদ্যপি

অভি + উদয়ঃ = অভ্যুদয়ঃ

ই + উ = ই-স্থানে স্

প্রতি + ঊষঃ= প্রত্যূষঃ

ই + এ = ই-স্থানে ঘৃ

প্রতি + এক = প্রত্যেকম্

ঈ + আ = ঈস্থানে ঘৃ

ঈ + এ = ঈস্থানে ঘূ

দেবী + আগতা দেব্যাগতা

বাপী + এষা বাপ্যেষা

প্রশ্নমালা

১। সঠিক উত্তরটিতে টিক (/) চিহ্ন দাও :

(ক) বিধু + উদয়ঃ = = বিষ্ণুদয়ঃ/বিহৃদয়ঃ/বিষ্ণুদয়ঃ/বিদ্ধিদয়ঃ ।

(খ) অ-কার এবং ও-কার মিলে হয় এ-কার/ঐ-কার / ঔ-কার/ও-কার।

(গ) নিস্তারঃ = নিঃ+ তারঃ/নি +তারঃ/নী + তারঃ/নির +তারঃ।

(ঘ) মনোহরঃ=মন + হরঃ / মনোহরঃ / মনঃ + হরঃ/মনে + হরঃ।

(ঙ) উষ্মবর্ণ পরে থাকলে পদের অন্তস্থিত ম্ স্থানে হয় বিসর্গ/চন্দ্রবিন্দু/অনুষার/ন।

২। শূন্যস্থান পূরণ কর :

(ক) + জীবেৎ = যাবজ্জীবেৎ। (খ) উৎ + হতঃ । (গ) অনু + অন্বেষণম্। (ঘ) - +

ঈশঃ = বাগীশঃ। (ঙ) 1 + ছায়া বৃক্ষচ্ছায়া। (চ) পূর্ণঃ + চন্দ্ৰঃ ==
=

৩। সম্মিবিচ্ছেদ কর :

মহাশয়ঃ, দেবেন্দ্রঃ, মহেশ্বরঃ, রাজর্ষি, স্বাগতম, গায়ক, উচ্চারণম্, উদ্ধার, ভদ্ভুতা, বহিষ্কৃতঃ,

নমস্কারঃ অতএব ।

৪। স্যি কর :

এক + একম্, প্রতি + ঊষঃ, ভৌ + উঃ, উৎ + লেখঃ, পরি + ছেদঃ, নিঃ + তারঃ, নিঃ + রবঃ,
মনঃ + হরর, মুনেঃ + ছাত্রাঃ।

নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

(ক) স্বরসন্ধির অন্য নাম কি?
(খ) ব্যঞ্জনসন্ধির অন্য নাম কি?

(গ) সন্ধির প্রয়োজনীয়তা কি?

(ঘ) কোন কোন ক্ষেত্রে সন্ধি অপরিহার্য?

(ঙ) অ-কারের পর আ-কার থাকলে উভয়ে মিলিত হয়ে কি হয়?

(চ) অ-কারের পর ও-কার থাকলে উভয়ে মিলিত হয়ে কি হয়

(ছ) ত্-এর পর চ্ থাকলে ভূ-স্থানে কি হয়?

যথাসম্ভব সন্ধি ব্যবহার করে সংস্কৃত অনুবাদ কর :

(ক) দেবী এলেন। (খ) আচার্যের আদেশ। (গ) প্রভাতে সূর্যের উদয়। (ঘ) তিনি আমার মাথার মণি ।
(ঙ) পূর্ণ চন্দ্র। (চ) ঘোড়া দৌড়ায়। (ছ) দুর্জন থেকে ভয়।

বাংলায় অনুবাদ কর :

(ক) স আগতঃ। (খ) শিশুইসতি। (গ) প্রাতভ্রমণং কুরু। (ঘ) কমলমিব নয়নম্ (ও) পিত্রাদেশং পালয়।
(চ) রামঃ সীতায়াঃ অন্বেষণ, চকার।

৮।
বিসর্গসন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও।

স্বরসস্থি ও ব্যঞ্জনসঘির পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।

১০। সন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও।

 

 

Content added By
Promotion